বিশ্বের প্রাচীনতম ধর্ম হয়ে কি এই ধর্ম বিজ্ঞানের বিপরীত?কি বলছে আধুনিক বিজ্ঞান?
জানেন কেন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ফিজিক্স গবেষণাগারে রয়েছে নৃত্যরত শিব?
CERN [Conseil Européen pour la Recherche Nucléaire”] বা ইউরোপীয় পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র খুবই বিখ্যাত একটা প্রতিষ্ঠান। লার্জ হ্যাইড্রন কোলাইডার নামক পার্টকেল এক্সিলেটারের মাধ্যমে হিগস-বোসন পার্টিকেল (যেটাকে মিডিয়া “গড পার্টিকেল” বলছে ) নিয়ে গবেষণার কারণে CERN আরো বিখ্যাত হয়ে উঠেছে (ছবিতে যে জায়গাটা দেখা যাচ্ছে সেটা হল জেনেভাতে অবস্থিত CERN এর মূল কম্পাউন্ডের একটা অংশ। মূর্তিটা মহাকাল শিবের নটরাজ মূর্তি)
ভারতে শিব মন্দিরের অভাব নেই। কৈলাস থেকে শুরু করে একেবারে দক্ষিণ পর্যন্ত তিনি বিরাজমান। হিন্দু ধর্মে শিবের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু অনেকেই জানেন না, শুধুমাত্র ধর্মেই নয়, বিজ্ঞানেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ শিব। তাঁর নটরাজ রূপের সঙ্গে বিজ্ঞানের এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাই বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণাগার সুইজারল্যান্ডের CERN-এ রয়েছে সেই নটরাজের মূর্তি।
কিন্তু বিশ্বের এত বড় গবেষণাগারে কেন শিব তথা নটরাজের মূর্তি স্থান পেয়েছে?
২০০৪ এর ১৮ জুন ২ মিটার লম্বা ওই মূর্তি স্থাপন করা হয় ওই গবেষণাগারে। এটি ছিল ভারত সরকারের একটি উপহার। কেন রাখা হয়েছে নটরাজ মূর্তি, একটি ফলকে লেখা রয়েছে তার ব্যাখ্যা। রয়েছে পদার্থবিদ ফ্রিৎজো ক্যাপ্রার বক্তব্য। তিনি বলেছেন, ‘কয়েক’শ বছর আগে কোনও ভারতীয় শিল্পী শিবের নৃত্যরত ছবি এঁকেছিলেন। আর সৃষ্টির নৃত্য বোঝাতে আমরা প্রযুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করি। আর এই সৃষ্টির ব্যাখ্যাই রয়েছে পুরাণে। এটাই একদিকে ধর্মীয় শিল্প আবার একদিকে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান।’
সেইসঙ্গে তিনি বিশ্লেষণ করে বলেছেন, ‘শিবের নৃত্য বিশ্বের সব অস্তিত্বের প্রতীক। একই সঙ্গে শিবই বুঝিয়ে দেন, বিশ্বের কোনও সৃষ্টিই স্থিতিশীল নয়, বরং সবসময় পরিবর্তনশীল আর আপেক্ষিকও বটে। আর আধুনিক পদার্থবিদ্যা বলে, শুধু জন্ম আর মৃত্যু দিয়েই সৃষ্টি আর ধ্বংস চিহ্নিত হয় না। অনেক অজৈব বিষয়ও জড়িয়ে থাকে।’ তিনি আরও লিখেছেন, শিবের নৃত্য আসলে একটি অতিপারমাণবিক বিষয়। সব অস্তিত্বের ভিত্তি আর সব প্রাকৃতিক বিষয়ের ইতিই বোঝায় এই নৃত্য।
CERN-এর এক গবেষকের ব্যাখ্যা হল, শিবের এই নৃত্য আসলে মনে করিয়ে দেয়, জগতে সবকিছুই পরিবর্তনশীল। কোনও কিছুর স্থিতি নেই। শিবের তাণ্ডব নৃত্যের মূর্তি রয়েছে ওই গবেষণাগারে। এক বিজ্ঞানী কার্ল সাগানও এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘হিন্দু ধর্ম হল বিশ্বের অন্যতম এক প্রাচীন ধর্ম যারা বিশ্বাস করে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে জন্মও মৃত্যুর সাইকেল চলছে।’
Comments
Post a Comment